তানোর (রাজশাহী) প্রতিনিধিঃ জাকির হোসেন-টুটুল।
রাজশাহীর তানোর উপজেলায় বিএনপি নেতা মেজর জেনারেল (অবঃ) শরিফ উদ্দিন অনুসারিরা আবার বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। শরিফ উদ্দিনের বেপরোয়া অনুসারিদের উসকানির প্রতিবাদ করায় এ্যাডভোকেট সুলতানুল ইসলাম তারেক অনুসারিদের সঙ্গে দু'দফা সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে দু'জন আহত হয়েছে।
গত ১৫ মে (বৃহস্পতিবার) রাতে চৌবাড়িয়া মালশিরা সিএনজি স্ট্যান্ডে প্রথম দফা এবং ১৬ মে (শুক্রবার) বিকেলে চৌবাড়িয়া গরু হাটে দ্বিতীয় দফা সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে তারেক অনুসারী দুই জন আহত হয়েছে
এক জনের অবস্থা গুরুত্বর।
এদিকে সংঘর্ষের জেরে চৌবাড়িয়া গরু হাটে ক্রেতা-বিক্রেতাদের মধ্যে চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। আহতরা হলেন তানোর পৌরসভার এক নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল ইসলাম এবং তানোর পৌর ছাত্রদলের নেতা সোহানুর রহমান শুভ। তবে সাইফুলের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (রামেকে) পাঠানো হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, ঘটনার সূত্রপাত হয় কামারগাঁ ইউনিয়ন (ইউপি) ওয়ার্ড বিএনপি সভাপতি তারেক অনুসারি মিজানুর রহমানের পাকা বাড়ির ছাদ ঢালায় সম্পন্ন উপলক্ষে, গত ১৫ মে (বৃহস্পতিবার) রাতে প্রীতিভোজ আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে এমপি মনোনয়ন প্রত্যাশী তারেক অনুসারীদের আমন্ত্রণ জানানো হয়। এদিন রাতে তারেক অনুসারী নেতাকর্মীরা সেখানে উপস্থিত হলে, শরিফ অনুসারী সুলতান মদ্যপ অবস্থায় তারেক অনুসারীদের উদ্দেশ্যে আপত্তিকর মন্তব্য করেন। এ নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে প্রথম দফায় সংঘর্ষ হয়। এরই জের ধরে ১৬ মে (শুক্রবার) চৌবাড়িয়া হাটে দ্বিতীয় দফা সংঘর্ষে সাইফুল ইসলামের ওপর হামলা করে গরু বিক্রয় এর টাকা ও মুঠোফোন তারা ছিনিয়ে নেয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, জনৈক শরিফ মুন্সির নেপথ্যে মদদে মেজর জেনারেল (অবঃ) শরিফ উদ্দিন অনুসারী সুলতান, মান্নান ও পিন্টুর নেতৃত্বে সাইফুল কে লোহার রড, হাতুড়ি ও বাঁশের লাঠি দিয়ে এলোপাতাড়ি আঘাত করা হয়। এমনকি তাকে প্রায় বিবস্ত্র করে টেনে হিচড়ে পাশের নলপুকুরিয়া এলাকায় নিয়ে গিয়ে বেধড়ক মারধর করে অজ্ঞান অবস্থায় ফেলে রেখে তার কাছে থেকে গরু বিক্রয় এর টাকা ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে যায়। আহত সাইফুলের পুত্র প্রত্যক্ষদর্শী সজিব ও ভাগ্নে এনামুল জানান, তিনি হাটে ৬টি গরু বিক্রি করতে যান। পাঁচটি গরু বিক্রি হয়, এমতাবস্থায় হামলাকারীরা তার উপর হামলা করে তার কাছে থেকে টাকা ও মোবাইল ছিনিয়ে নেয়।
অন্যদিকে মেজর জেনারেল (অবঃ) শরিফ উদ্দিন অনুসারীদের দাবি, গত১৫ মে (বৃহস্পতিবার) রাতে দাওয়াতে" ঘোড়ার মাংস" সংক্রান্ত কটুক্তির জের ধরে তারেক অনুসারীরা শরিফ অনুসারী সুলতানকে মারধর ও মোবাইল ছিনিয়ে নেয়। পরে শরিফ অনুসারী সুলতানের লোকজন তারেক অনুসারীদের মৃদু মারপিট করে, তবে টাকা বা মোবাইল ছিনিয়ে নেয়ার অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।
এ বিষয়ে সাবেক মেম্বার ও বিএনপি নেতা আব্দুল মান্নান জানান, তিনি শুক্রবারের সংঘর্ষে উপস্থিত ছিলেন না। তবে বৃহস্পতিবার রাতে মারামারির খবর তাকে ফোনে জানানো হয়।
এ বিষয়ে তানোর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আফজাল হোসেন বলেন, “সংঘর্ষের খবর পাওয়ার সঙ্গে, সঙ্গে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। পরিস্থিতি এখন শান্ত। এখন পর্যন্ত কোনো পক্ষ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, এর আগে রমজান মাসে ইফতার মাহফিলকে কেন্দ্র করে পাঁচন্দর ও চাঁন্দুড়িয়া ইউনিয়নে (ইউপি) বিএনপির দুটি গ্রুপের পৃথক সংঘর্ষে দুই বিএনপি নেতার মৃত্যু ঘটে। এসব কারনে তানোরে বিএনপির রাজনৈতিক কার্যক্রম দীর্ঘদিন যাবত প্রায় স্থবির হয়ে পড়েছে।