1. live@www.dainikbangladeshpratidin.online : দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন : দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন
  2. info@www.dainikbangladeshpratidin.online : দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন :
মঙ্গলবার, ১০ জুন ২০২৫, ১২:২০ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
বেলকুচিতে বাইক কাপ ক্রিকেট টুর্নামেন্ট ২০২৫ ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত। সাঁতার শেখাতে গিয়ে চাচা-ভাতিজার মর্মান্তিক মৃত্যু ভাঙ্গায় মাইকে ঘোষণা দিয়ে গ্রামবাসী সংঘর্ষঃবাড়িঘর ভাংচুর- লুটপাটের অভিযোগ ভাঙ্গায় মাদ্রাসার পুকুর থেকে যুবকের ভাসমান লাশ উদ্ধার বেলকুচি সোহাগপুর সরকারি শ্যাম কিশোর পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয় এসএসসি ২০০০ ব্যাচের বন্ধু পূর্ণমিলনী ২০২৫ অনুষ্ঠিত- ব্যাপটিষ্ট চার্চের শিক্ষার্থীদের নিয়ে এপেক্স ক্লাব অব পটিয়ার ফল উৎসব। ইসলামী স্বপ্ন বাস্তবায়ন সংস্থার ২০২৫-২৭সেশনের কার্যকরী কমিটি গঠিত সভাপতি : নুরুল কবির এবং সাধারণ সম্পাদক : সাইফুল ইসলাম দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা শনাক্ত কত? ভাঙ্গায় বাসের ধাক্কায় মোটরসাইকেল আরোহী নিহত পতেঙ্গা থানার শীর্ষ কিছু মাদক ব্যবসায়ী এখনো অধরা

মাছবাজার দখল ক‌রে বিএনপি নেতা বললেন, আমরা সিটি করর্পোরেশনের লোক

জাতীয় দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন প্রত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক সাংবাদিকঃ মোং রিদুয়ান চৌধুরী 01307869794,01783309708
  • প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ২৭ মে, ২০২৫
  • ৬৯ বার পড়া হয়েছে

 

মোং রিদুয়ান চৌধুরী
টেন্ডারের আগেই সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে চট্টগ্রামের ফিসারীঘাটস্থ মাছবাজারের ঘাট দখলের অভিযোগ উঠার পর  বিএনপির দুই নেতা একই বাজার দখলে নিতে নির্মাণ করছেন বেশ কিছু স্থাপনা। রবিবার সকাল থেকে ফিসারীঘাট মাছ বাজারের বিভিন্ন অংশে ঘর নির্মাণে কাজ করতে দেখা যায় নির্মাণ শ্রমিকদের।

রবিবার চট্টগ্রাম নগরের চাক্তাই ফিশারিঘাট এলাকায় দেখা গেছে অবৈধভাবে ঘর নির্মাণের  চিত্র। অভিযোগ উঠেছে, চসিকের পক্ষ থেকে এখনও বাজারের ঘাট ইজারা না হলেও ইজারাদার দাবি করে টাকা তুলছেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও মহানগর বিএনপির সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ইয়াছিন চৌধুরী আছু ও মহানগর বিএনপির সাবেক উপদেষ্টা ও ১৯ নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মোহাম্মদ নবাব খান। পাশাপাশি ওই এলাকায় পান দোকান থেকে শুরু করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে গণহারে চাঁদা আদায় করা হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে আতঙ্কে রয়েছেন মাছ বাজারের (ফিশ ল্যান্ডিং সেন্টার) সাধারণ ব্যবসায়ীরা। মাছবাজার দখলে ঘর নির্মাণ করা দুই বিএনপি নেতা ডা. শাহাদাতের অনুসারী বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।

নির্মাণ কাজের সাথে জড়িত শ্রমিকদের সাথে কথা বলতে গেলে উপস্থিত গণমাধ্যমকর্মীদের বাঁধা দেয়া হয়।

সরেজমিনে দেখা যায়, ফিশ ল্যান্ডিং সেন্টার নামক জায়গার পশ্চিমাংশের খালি জায়গায় বাঁশ, কাঠ ও টিন দিয়ে অস্থায়ী টিনের ও বাঁশের বেড়ার ঘর নির্মাণ করা হচ্ছে। বাজার দখল করার পাঁয়তারা হিসেবে বিএনপির কিছু লোকজন ঘর নির্মাণ করছে।

জানতে চাইলে ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা জনৈক ওমর ফারুক বলেন, আমরা চট্টগ্রাম সিটি করর্পোরেশনের কর্মচারী। খাস খালেকশানের কাজ করছি। ঘাটের খাস কালেকশানের জন্য ঘর নির্মাণ করছি। এটা মেয়র মহোদয় অবগত আছেন, সিটি করর্পোরেশন জানে।

ওমর ফারুক নিজেকে চট্টগ্রাম সিটি করর্পোরেশনের লোক পরিচয় দিলেও খোঁজ নিয়ে জানা যায় ওমর ফারুক বাকলিয়া থানা যুবদলের সদস্য। বিএনপি নেতা নবাব খান ও ইয়াসিন চৌধীর আশুর অনুসারী ওমর ফারুক।

জানতে চাইলে সোনালী যান্ত্রিক মৎসজীবি সমবায় সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ আলী বলেন, বন্দর থেকে লিজ নিয়ে বৈধভবে এই ফিশ ল্যান্ডিং সেন্টার গড়ে তোলা হয়েছে, এই বাজারের মাছ আভ্যন্তরীণ চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে । অযাচিতভাবে কেউ বাজার দখল করার জন্য অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করলে সেটি রাষ্ট্রের জন্যই ক্ষতি হবে। আমরা পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছি।

এ বিষয়ে চট্টগ্রাম সিটি করর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ তৌহিদুল আলম বলেন, ইতিপুর্বে এই জমিতে সিটি করর্পোরেশনের খাস কালেকশান ছিলো না। নতুন করে বন্দরের এই জমিতে খাস কালেকশানের বিষয়টি হয়তো মেয়র মহোদয় জানবেন। আমার জানা নেই।

নথি অনুযায়ী বন্দর ও জেলা প্রশাসনের পারস্পরিক ভূমি বিরোধ  নিয়ে মহামান্য সুপ্রীম কোর্টের আপিল বিভাগে মামলা চলমান আছে। (সিভিল বিবিধ পিটিশিন নম্বর ৭৮১/২৪, হাই কোর্ট বিভাগের রিট পিটিশন নং ৪৬২৪/২৫)। এছাড়া বিজ্ঞ ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইবুনাল চট্টগ্রামে (এল, এস, টি নম্বর ৪৮৪৫/২৪) ও বিজ্ঞ যুগ্ম জেলা জজ ৩য় আদালতে  আরেকটি মামলা (নম্বর ৭০/২৫) চলমান আছে।  মৎস্যজীবীদের পুনর্বাসন না করে কোন ধরনের উচ্ছেদ না করার হাইকোর্টের নির্দেশনা আছে।

এর আগে টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষ হবার পূর্বেই সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে মাছবাজার দখলের অভিযোগ উঠে দুই বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে। মাছ বাজারের দুই পাশে ব্যানার ঝুলিয়ে দিয়েছিলেন বিএনপির দুই নেতা। সেই ব্যানারে তাদের ছবির সাথে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেনের ছবিও ছিলো।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়,  লাগানো সাইনবোর্ডে   উল্লেখ করা হয়েছিলো চসিকের একটি স্মারক নম্বরও। তারা যে সাইনবোর্ডটি ঝুলিয়েছিলেন সেখানে দুজনের ছবি ছাড়াও সবার ওপরে দেওয়া হয়েছে চসিক মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেনের ছবি। আর সবুজ কালিতে তাদের পরিচয়ে লেখা হয়েছে ‘ইজারাদার’। গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর রাতারাতি সেই সাইনবোর্ড সরিয়ে ফেলা হয়।

চট্টগ্রাম সিটি করর্পোরেশন সুত্র জানিয়েছে, ঘাটের ইজারাদার নিয়োগে দরপত্র আহ্বান করার পর একটি প্রতিষ্ঠান দরপত্রে অংশগ্রহন করে। অভিযোগ উঠা দুই নেতা বা তাদের মালিকানাধীন কোন প্রতিষ্ঠান দরপত্রে অংশ নেন নি।
নথি অনুযায়ী বন্দর কর্তৃপক্ষ হতে লিজ মূলে ২০১৪ সালের ১৮ ডিসেম্বর (১৪৭৭৫ নম্বর) এবং ২০১৫ সালের ১৯ শে সেপ্টেম্বর  তারিখে চট্টগ্রাম বন্দরের (১৫০৫৩ নম্বর) বোর্ড রেজুলেশন মূলে ফিসারীঘাটের ক্যাপিটাল ড্রেজিং থেকে সৃস্ট পরিত্যক্ত এই জমি (১,৭৩,২৬৩ বর্গফুট)  বাংলাদেশ জাতীয় মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি লিমিটেড’কে ১৫ বছর মেয়াদের লিজ দেয়া হয়েছিলো। সরকারী বিধি মোতাবেক বন্দরের সাথে  চুক্তি সম্পাদন করে ফিশ ল্যান্ডিং সেন্টার গড়ে তোলা হয়েছিলো ২০১৫ সালে। সেই বন্দরকে বাৎসরিক ৬৩ লাখ টাকা ভাড়া দিয়ে আসছে সোনালী যান্ত্রিক মৎসজীবি সমবায় সমিতি।  বর্তমানে এটি দেশের সবচেয়ে বড় ও আধুনিক মাছ বাজার। কিন্তু ফিরিঙ্গিবাজার পুরোনো মাছ বাজার বন্দরের এই জমিতে স্থানান্তর নিয়ে সাবেক মন্ত্রী মুহিবুল হাসান নওফেলের সরাসরি আপত্তি ছিলো। এছাড়া সাবেক মেয়র মহিউদ্দিন চৌধুরীও ফিরিঙ্গিবাজার থেকে ফিসারীঘাটে নতুন মাছ বাজার স্থানান্তরের ঘোর বিরোধী ছিলেন। সরকার পতনের পর ফিরিঙ্গি বাজার মাছ বাজারের (পুরাতন বাজার) সিন্ডিকেটের সাথে নতুন ফিসারীঘাট মাছবাজার বন্ধে চুক্তিবদ্ধ হন বিএনপি নেতারা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মাছ ব্যবসায়ী জানান, দরপত্রে অংশ নিয়ে সরকারকে রাজস্ব দিতে রাজি নন দখলদাররা। তারা মাসোহারা আদায় করতে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ থেকে ইজারা নেয়া মাছ বাজার দখলে নিতে চাইছেন। বাজার সংলগ্ন  ঘাটে চসিকের দরপত্র আহবানে ‘একান্ন লক্ষ টাকা’ ডাক উঠেছে। আইন অনুযায়ী অভিযোগ উঠা দখলদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবার কথা। উল্টো তারা দিন দুপুরে চট্টগ্রাম সিটি করর্পোরেশনের লোক দাবি করে ঘর নির্মাণ করছে।

এই ব্যবসায়ী আরও বলেন, বাজারের খালি জায়গা জোর পূর্বক দখল করার অপচেষ্টা করছে রাজনৈতিক পরিচয়ধারী কিছু ব্যক্তি। সিটি করর্পোরেশনের জায়গা নয় এটি-তাহলে খাস কালেকশান কেন করবে? মেয়রও বেআইনি কাজ কেন করবেন! এদের চাঁদাবাজির কারণে ব্যবসা পরিচালনা করা অসম্ভ হয়ে পড়েছে। সন্ত্রাসীদের জোরপূর্বক বেআইনী ও অনুপ্রবেশের কারণে বর্তমানে বাজারের সাধারণ ব্যবসায়ী ও ক্রেতা সহ সকলে ভয়ে ভীত সন্ত্রন্ত।  ‘

প্রসঙ্গত, চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ইজারা নিয়ে জাতীয় মৎসজীবি সমবায় সমিতি লিমিটেড ২০১৫ সালে ফিসারীঘাটের ৩.৯৭ একর (১ লক্ষ ৭৩ হাজার ২৬৩ বর্গফুট) টেন্ডারের আগেই সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে চট্টগ্রামের ফিসারীঘাটস্থ মাছবাজারের ঘাট দখলের অভিযোগ উঠার পর  বিএনপির দুই নেতা একই বাজার দখলে নিতে নির্মাণ করছেন বেশ কিছু স্থাপনা। রবিবার সকাল থেকে ফিসারীঘাট মাছ বাজারের বিভিন্ন অংশে ঘর নির্মাণে কাজ করতে দেখা যায় নির্মাণ শ্রমিকদের। পরিত্যক্ত জমিতে আধুনিক ফিস ল্যান্ডিং সেন্টার গড়ে তোলে। কর্ণফুলী নদীর তীরবর্তী জমিটির মালিকানা দাবি করে আসছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনও। বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়ায়। মৎস্যজীবীদের পুনর্বাসন না করে এই জমি থেকে ব্যবসায়ীদের উচ্ছেদ না করার নির্দেশনা দেয়  হাইকোর্ট।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত, আমাদের প্রকাশিত সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার অপরাধ।
ওয়েবসাইট ডিজাইন: ইয়োলো হোস্ট