রাকিবুল ইসলাম তুরান।
ফরিদপুর প্রতিনিধি |
ফরিদপুর সদর উপজেলার গুহ লক্ষ্মীপুর রেলওয়ে বস্তি—যেখানে দিনের আলোয় মাদক কেনাবেচা হতো প্রকাশ্যে, আর রাত নামলেই শুরু হতো সন্ত্রাসের রাজত্ব। বহুদিন ধরে এই এলাকায় অবাধে চলছিল এক নারীর নেতৃত্বে গড়ে ওঠা মাদকের সম্রাজ্য। সেই সম্রাজ্ঞী শিলপি বেগমের (৩০) চক্র এবার ভেঙে দিল যৌথবাহিনী।
২৬ জুন রাতে আন্তর্জাতিক মাদকবিরোধী দিবসকে কেন্দ্র করে সেনাবাহিনী ও পুলিশের সমন্বয়ে চালানো হয় এক বিশেষ অভিযান। অভিযানে আটক করা হয় শিলপি বেগমসহ ১৫ জনকে। উদ্ধার করা হয় বিপুল পরিমাণ মাদক, দেশীয় অস্ত্র ও অপরাধমূলক কার্যকলাপের নানা সরঞ্জাম।
সেনাসূত্রে জানা গেছে, শিলপি বেগম দীর্ঘদিন ধরে ওই এলাকায় একটি সুসংগঠিত মাদক নেটওয়ার্ক পরিচালনা করে আসছিলেন। নারীদের ব্যবহার করে এলাকাজুড়ে বিক্রি হতো ইয়াবা, গাঁজা ও হেরোইন। অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, ভারতের মাদক পাচারকারীদের সঙ্গেও তার ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিল।
এই চক্র শুধু মাদক নয়, ভয়ভীতির রাজত্ব কায়েম করে এলাকাবাসীকে জিম্মি করে রেখেছিল। শিলপির নেতৃত্বে চলে দখলবাজি, চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী তৎপরতা।
২৬ জুন রাত ৮টায় ১৫ ইঞ্জিনিয়ার ব্যাটালিয়নের নেতৃত্বে এবং পুলিশের সহায়তায় শুরু হয় ‘মাদকবিরোধী ক্লিন অপারেশন’। প্রথম ধাপে হাতেনাতে আটক করা হয় সাতজনকে। পরে বস্তির কেন্দ্রস্থলে অভিযান চালিয়ে শিলপিসহ আরও আটজনকে আটক করা হয়।
শিলপির বাড়িতে পাওয়া যায়:
৪৫.৫ কেজি গাঁজা
৩৩৭ পিস ইয়াবা
২১১ প্যাকেট হেরোইন
৬১টি দেশীয় ধারালো অস্ত্র
২ বোতল বিদেশি মদ
৯টি সাধারণ মোবাইল ফোন
১০টি অ্যান্ড্রয়েড সেট
পরবর্তী পদক্ষেপ
আটককৃতদের ফরিদপুর কোতোয়ালি থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে মাদক ও সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
সেনাবাহিনী জানিয়েছে, অবৈধ মাদক ও অস্ত্রবাণিজ্যের বিরুদ্ধে তারা ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি অনুসরণ করছে। এ ধরনের অপরাধের বিরুদ্ধে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করতে স্থানীয়দের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।