তানোর (রাজশাহী) প্রতিনিধি; জাকির হোসেন- টুটুল।
রাজশাহী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি (পবিস) তানোর এরিয়া কার্য্যালয়ে দালাল চক্রের দৌরাত্ম্যে সাধারণ গ্রাহকগণ অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে।
তানোর পল্লী বিদ্যুৎ কার্য্যালয় আকুন্ঠ দূর্নীতিতে নিমজ্জিত হয়ে অনিয়ম-দূর্নীতির আখড়ায় পরিণত উঠেছে। একশ্রেণীর কর্মকর্তার মদদে গড়ে উঠেছে একটি দালাল
চক্র সিন্ডিকেট।
রাজনৈতিক পরিচয়ের
একশ্রেণীর কথিত প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত
টেকনিশিয়ান এখানে দালাল হিসেবে কাজ করছে। দালাল সিন্ডিকেট চক্রের গড ফাদার বহিরাগত দু’ভাই। কামারগাঁ ইউপি স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি জহুরুল ইসলাম লিটন ও তার ভাই জাহাঙ্গীর আলম। বিদ্যুৎ বিভাগের সঙ্গে এসব দালালদের কোনো সংশ্লিষ্টতা না থাকলেও। তারা দুই ভাই প্রতিনিয়ত পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত, অবস্থান করে নিয়মিত কর্মকর্তা-কর্মচারিদের সঙ্গে দাফতরিক কাজ করেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, মাদারীপুর এলাকার বহিরাগত দু’ভাই দালাল সিন্ডিকেট চক্র নিয়ন্ত্রণ করছে। তারা বলেন, অফিসে কোনো গ্রাহক আসা মাত্র অফিস থেকে কৌশলে তাদের দালালদের কাছে পাঠানো
হচ্ছে। কাজে ক্রটি থাক বা না থাক এখানে নিদ্রিষ্ট দালালের মাধ্যমে কাজ করতে হচ্ছে, ব্যতিক্রম হলে সাধারণ গ্রাহকদের নানা ভাবে হয়রানি করা হচ্ছে বলেও একাধিক সূত্র
নিশ্চিত করেছে। এই দুই দালালের এক ভাইয়ের বিরুদ্ধে গ্রাহকের টাকা আত্মসাৎ অপর ভাইয়ের বিরুদ্ধে থানায় অবৈধভাবে মিটার স্থানান্তরের অভিযোগ রয়েছে।
অন্যদিকে দালালদের নিয়ন্ত্রক বহিরাগত যুবক লিটনের মোটরসাইকেলে ডিজিএম সাহেব চলাফেরা করায় ভয়ে দালালদের
বিরুদ্ধে কেউ কোনো প্রতিবাদ করতে সাহস পায় না।
এই দালাল কোনো কোনো ক্ষেত্রে
নিজেকে ডিজিএম সাহেবের একান্ত সহকারী বলেও সাধারণ মানুষের কাছে থেকে হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে
নিচ্ছেন।
তানোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির একশ্রেণীর
কর্মকর্তার যোগসাজশে কথিত লাইনম্যানরা (দালাল) সাধারণ
গ্রাহকের মিটারে গ্রাহক ক্রটি দেখিয়ে হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়ে জম্পেশ ঘুষ বাণিজ্য করছেন। এছাড়াও রাঁতের আঁধারে কথিত লাইনম্যানরা (দালাল) সাধারণ গ্রাহকের মিটারের সিলমোহর কেটে দিয়ে গ্রাহকদের মামলা-মোর্কদ্দমার ভয় দেখিয়েও হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন।
উপজেলার কলমা ইউনিয়নের (ইউপি) অমৃতপুর গ্রামের রাইস মিল চালক মোজাম্মেল হোসেন বলেন,তার থ্রি-ফেইজ
লাইনের মিটার বক্সে টিকটিকি ঢুকে শর্টসার্কিট হয়ে মিটার পুড়ে যায়। নিয়মানুযায়ী বিনামূল্যে অফিস থেকে তার মিটার পাওয়ার কথা।কিন্ত্ত ডিজিএম সাহেব মিটার দিতে তার কাছে থেকে ১৬ হাজার ১৯৭ টাকা নিয়েছেন। একই ইউপির বনগাঁ গ্রামের মৃত নুরমোহাম্মদের পুত্র মনির হোসেন বিদ্যুতের একটি পোল স্থানান্তরের আবেদন করেন।বিগত ২০২৪ সালের ১৪ নভেম্বর পোল স্থানান্তর ফি-বাবদ ৪ হাজার ৯৯৯ টাকা জমা দেন। কিন্ত্ত অজ্ঞাত কারণে এখানো তার পোল স্থানান্তর করা হয়নি। এক পর্যায়ে তাকে জানানো হয় অফিসে তার টাকা জমা দেয়ার কোনো ডকুমেন্ট নাই। কচুয়ার জনৈক মিজান বলেন,ভাড়া জায়গায় তার মটরে মৎস্য সংযোগ নিতে লিটনের মাধ্যমে ৫০ হাজার টাকা ঘুষ নিয়েছে।
সম্প্রতি, এসব দালাল থেকে পরিত্রাণের আশায় সাধারণ গ্রাহকরা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির রাজশাহী জেনারেল মানেজারের (জিএম) কাছে ডাকযোগে লিখিত অভিযোগ করেছেন, কিন্ত্ত কোনো প্রতিকার পায়নি।
এবিষয়ে তানোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির
কর্মকর্তা (ডিজিএম) রেজাউল করিম খাঁন এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তার অফিসে দালালদের কোনো
অস্থিত্ব নাই। তিনি বলেন, কারো বিরুদ্ধে সুনিদ্রিষ্ট অভিযোগ পেলে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এবিষয়ে রাজশাহী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) রমেন্দ্র চন্দ্র রায় বলেন, এসব বিষয়ে তিনি এখানো কোনো লিখিত অভিযোগ পাননি। তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত খোঁজখবর নিয়ে দেখা হবে বলে তিনি জানান।