ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধি
গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার বরমী ইউনিয়নের সাহসী রাজনীতিক ব্যাক্তিত্ব রাসেল আকন্দ একজন পরিচিত নাম। ছাত্র রাজনীতি দিয়ে শুরু করে এখন পর্যন্ত রাজপথে থেকে ফ্যাসিস্ট শাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন তিনি। বারবার হামলা-মামলা-নির্যাতন আর দুর্ঘটনায় আহত হয়ে পঙ্গু হলেও রাজপথ ছাড়েননি।
১৯৯৫ সালে রাজনীতিতে সক্রিয় হয়ে ওয়ার্ড ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন রাসেল আকন্দ। একই বছর বরমী ইউনিয়ন ছাত্রদলের সহ-সভাপতির দায়িত্ব পান। ১৯৯৭ সালে সাতখামাইর আঞ্চলিক ছাত্রদলের সদস্য সচিব নির্বাচিত হন তিনি। পরে বরমী ইউনিয়ন যুবদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি এবং গাজীপুর জেলা যুবদলের সদস্য হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।
বর্তমানে তিনি শ্রীপুর উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক এবং বরমী ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য হিসেবে কর্মরত আছেন।
অসংখ্য মামলা, বারবার কারাবরণ, তবুও অটল মনোবল
১৯৯৬ সালে রাজনৈতিক কারণে প্রথমবারের মতো গ্রেফতার হয়ে কারাবরণ করেন রাসেল আকন্দ। এরপর আরও দুইবার কারাবরণসহ অসংখ্য মামলার সম্মুখীন হন। ১৯৯৭ সালে ইন্টারমিডিয়েট ১ম বর্ষে পড়ার সময়, মায়ের সাথে বসে খাবার খাওয়ার সময়ই তাকে গ্রেফতার করা হয়। রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের কারণে তার বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে একাধিকবার হামলা চালানো হয় এবং প্রায় এক কোটিরও বেশি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়।
প্রাণে বেঁচে রাজপথে ফেরা
২০১৮ সালে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে পুলিশের সঙ্গে ছাত্রলীগের যৌথ হামলায় গুরুতর আহত হন। TR সেলের আঘাতে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হন রাসেল আকন্দ। ২০২২ সালে একটি রাজনৈতিক কর্মসূচি শেষ করে ফেরার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হন। দীর্ঘদিন ট্রমা সেন্টার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। এখনও তার ডান পায়ে ১২টি স্ক্রু লাগানো আছে এবং নিয়মিত চিকিৎসা নিচ্ছেন। তবুও ক্র্যাচে ভর করে রাজপথে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি।
জীবনের মায়া ত্যাগ করে রাজপথে
সংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে রাসেল আকন্দ বলেন,
“আমি যখন দেখছিলাম, আমার চোখের সামনে আমার বাংলাদেশটাকে হায়নার মতো ছিঁড়ে খাচ্ছিল, দেশের হাজারো মা-বোনদের ইজ্জত কেড়ে নিচ্ছিল, রাজপথে আমার ভাইদের কোনো অপরাধ ছাড়াই গুলি করে বুক ঝাঁঝড়া করে দিচ্ছিল, তখন আমি অসুস্থ থাকার পরও ঘরে বসে থাকতে পারিনি। এ দেশকে ফ্যাসিস্ট মুক্ত করার জন্য জীবনের মায়া ত্যাগ করেই রাজপথে যেতাম। এই আন্দোলন সংগ্রামে আমাদের নেতৃত্ব দিয়েছেন গাজীপুর-৩ আসনের ধানের শীষের কান্ডারী অধ্যাপক ডাঃ রফিকুল ইসলাম বাচ্চু ভাই। উনার নেতৃত্বে আমরা আগে যেমন ঐক্যবদ্ধ ছিলাম, এখনও আছি, ভবিষ্যতেও থাকব ইনশাআল্লাহ।”
দলের জন্য একজন নিবেদিত প্রাণ নেতা
৫ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আঃ লতিফ বলেন,
“রাসেল আকন্দ ভাই অত্যন্ত মেধাবী ও পরিশ্রমী নেতা। ফ্যাসিস্ট শাসনামলে অনেক হামলা-মামলা সহ্য করার পরও রাজপথেই রয়েছেন। এলাকায় বিএনপির সাধারণ কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ রাখতে ও মনোবল বৃদ্ধির জন্য তিনি নিরলস পরিশ্রম করেছেন। ভাঙা পা হার মেনেছে রাসেল ভাইয়ের কাছে। ক্র্যাচে ভর করে রাজপথে যাওয়াটা আমাদের অনুপ্রেরণা যুগায়। উনার মতো নেতা দলের জন্য এক অমূল্য সম্পদ।”
রাসেল আকন্দ শুধু একজন রাজনীতিবিদ নন, তিনি একজন সংগ্রামী সৈনিক।কেন্দ্রীয় বিএনপির স্বাস্থ্য বিষয়ক সহ সম্পাদক অধ্যাপক ডাঃ রফিকুল ইসলাম বাচ্চুর নেতৃত্বে রাজপথে পরিচিত মুখ রাসেল আকন্দ।রাজনীতির ঝড়-ঝাপটা, মামলার ভয়, হামলার হুমকি, এমনকি শারীরিক পঙ্গুত্বও তাকে দমিয়ে রাখতে পারেনি। দেশের গণতন্ত্র ও মানুষের অধিকার রক্ষায় এমন সাহসী নেতার প্রয়োজন এখন সময়ের দাবি।