মো: রাসেল মোল্লা
রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি
পানি নিষ্কাশনের ব্যর্থতায় রূপগঞ্জে লাখো মানুষ এখন পানিবন্দি অবস্থায় চরম দুর্ভোগে দিন কাটাচ্ছে। বানিয়াদি এলাকায় স্থাপিত অগ্রণী সেচ প্রকল্পের মেশিন চালু করা যাচ্ছে না ফোর ফর্টি লাইন না থাকায়।
মেশিন অপারেটর জানান, “পল্লী বিদ্যুৎ অফিস থেকে লাইন ঠিক করার খবর পেলেই মেশিন চালু হবে। লাইন ঠিক থাকলে অল্প সময়েই পানি নামানো সম্ভব।”
এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর সাওঘাট অফিসের ডিজিএমের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। পরে ইঞ্জিনিয়ার আলতাফ হোসেন বলেন, “বিষয়টি আমি দেখছি।”
ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেন, অপরিকল্পিত সেচ প্রকল্প, খাল দখল ও ভরাটের কারণেই জলাবদ্ধতা স্থায়ী রূপ নিচ্ছে। সরেজমিনে দেখা গেছে—তারাবো, কর্ণগোপ গন্ধবপুর বরপা, ভুলতা, গোলাকান্দাইল, আমলাবো, বলাইখা, বিজয়নগরসহ প্রায় ৩০টির বেশি গ্রাম ও পাড়া-মহল্লা পানিতে তলিয়ে গেছে। হাঁটু থেকে কোমরসমান পানি ঢুকে পড়েছে ঘরে ঘরে। বিশুদ্ধ পানির সংকট তীব্র, গবাদি পশু সরিয়ে নেওয়া ও বাঁশের মাচায় বসবাস যেন নিত্যচিত্র হয়ে উঠেছে। শিল্পকারখানাও জলাবদ্ধতায় ক্ষতিগ্রস্ত। দুর্গন্ধযুক্ত কেমিক্যাল মিশ্রিত পানিতে নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ।
১৯৮৪ সালে ৯০ কোটি ৮২ লাখ টাকা ব্যয়ে ‘অগ্রণী সেচ প্রকল্প-১’ এবং ১৯৯৩ সালে আরও ১০১ কোটি টাকা ব্যয়ে শীতলক্ষ্যার পূর্ব পাড়ে ৫ হাজার হেক্টর জমি রক্ষায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ নির্মাণ করা হয়। কিন্তু কিছু বছরের মধ্যেই শুরু হয় জলাবদ্ধতা। পরবর্তীতে প্রকল্প এলাকায় মিল-কারখানা গড়ে ওঠে, ফলে বসতি ও শিল্পায়নের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে জলাবদ্ধতাও বেড়ে যায়।
রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, “গত ১১ মাসে ৮টি খাল পুনরুদ্ধার করা হয়েছে। খাল খনন ও ড্রেন নির্মাণের কাজ চলছে। আশা করছি আগামী দুই-তিন দিনের মধ্যে জলাবদ্ধতা কিছুটা কমে আসবে।”
পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-পরিচালক রাকিবুল আলম রাজিব জানান, “তারাবো পৌরসভার অধিকাংশ খাল শিল্প প্রতিষ্ঠানের দখলে। পানি বের হতে না পারায় জলাবদ্ধতা স্থায়ী রূপ নিয়েছে। খাল উদ্ধার করে স্বাভাবিক পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ চলছে।