সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধিঃ
সিরাজগঞ্জ জেলায় বেলকুচি উপজেলার বেলকুচি প্রেসক্লাব দীর্ঘ এক যুগেরও বেশি সময় ধরে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া থেকে বঞ্চিত হয়ে মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটির মাধ্যমে চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। নির্বাচনবিহীন এ কমিটি অনিয়ম-অস্বচ্ছতার মধ্য দিয়ে প্রেসক্লাবকে ব্যক্তিগত সম্পত্তি হিসেবে ব্যবহার করছে বলে দাবি করেছেন প্রেসক্লাবের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট শহীদুল ইসলাম সরকার।
শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে সিরাজগঞ্জের ব্রাইট হেলথ হাসপাতালের আন্ডারগ্রাউন্ডে নিজ চেম্বারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বেলকুচি প্রেসক্লাবের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট শহীদুল ইসলাম বলেন—
“এক যুগেরও বেশি সময় ধরে বেলকুচি প্রেসক্লাবে কোনো নির্বাচন হয়নি। প্রেসক্লাবটির নিজস্ব কোনো গঠনতন্ত্রও নেই। প্রেসক্লাবকে দখল করে একক আধিপত্য বিস্তার করছেন বর্তমান সভাপতি। তিনি এটিকে নিজের পারিবারিক সম্পত্তি ভেবে ব্যবহার করছেন। প্রকৃত সাংবাদিকরা এখানে প্রবেশাধিকার পাচ্ছেন না।”
তিনি অভিযোগ করে আরও বলেন, বেলকুচি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও বর্তমান প্রধান উপদেষ্টা সাইদুর রহমান স্বৈরাচার শাসকের মতো প্রেসক্লাব দখল করে রেখেছেন। একক কর্তৃত্ববাদী প্রভাব বিস্তার করে তিনি গণতন্ত্রকে উপহাসে পরিণত করেছেন।”
বেলকুচি প্রেসক্লাবের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট শহীদুল ইসলাম এ সময় আরো বলেন, বর্তমান সভাপতি প্রেসক্লাবের মূলধারার সাংবাদিকদের কৌশলে কোণঠাসা করে রেখেছেন। বিশেষ করে নতুন প্রজন্মের তরুণ সাংবাদিকরা সুযোগ পাচ্ছেন না। সদস্যদের মতামত উপেক্ষা করে স্বেচ্ছাচারিতার মাধ্যমে কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। ফলে প্রেসক্লাব তার মূল লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত হয়ে সাংবাদিক সমাজের মর্যাদা ক্ষুণ্ণ করছে।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি স্পষ্টভাবে ঘোষণা করেন, আগামী ৭ দিনের মধ্যে প্রেসক্লাবের মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি ভেঙে একটি নিরপেক্ষ আহ্বায়ক কমিটি গঠন করতে হবে। অন্যথায় বেলকুচির সাংবাদিক সমাজ বৃহত্তর আন্দোলনে যাবে বলে হুঁশিয়ারি দেন।
তিনি বলেন, “প্রেসক্লাব কোনো ব্যক্তি বা দলের সম্পত্তি নয়, এটি সকল সাংবাদিকের অভিন্ন প্ল্যাটফর্ম। সুষ্ঠু নির্বাচন ও গঠনতন্ত্র প্রণয়নের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ফিরিয়ে আনতেই হবে।”
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত সাংবাদিকরা বলেন, একটি প্রেসক্লাব হলো গণমাধ্যম কর্মীদের অধিকার ও মর্যাদা রক্ষার সংগঠন। অথচ বেলকুচি প্রেসক্লাবকে ব্যক্তিগত সম্পত্তি বানানোর অপচেষ্টা চলছে। তারা অবিলম্বে আহ্বায়ক কমিটি গঠন করে নিয়মতান্ত্রিকভাবে নির্বাচন দেওয়ার দাবি জানান।
বেলকুচি প্রেসক্লাবকে ঘিরে দীর্ঘদিনের এই অচলাবস্থা নিয়ে সাংবাদিক মহলে তীব্র অসন্তোষ বিরাজ করছে। সাংবাদিকদের দাবি—প্রেসক্লাবকে গণতান্ত্রিক কাঠামোয় ফিরিয়ে এনে প্রকৃত সংবাদকর্মীদের অধিকার ও মর্যাদা নিশ্চিত করতে হবে।