তানোর (রাজশাহী) প্রতিনিধিঃ জাকির হোসেন-টুটুল।
রাজশাহীর তানোর উপজেলায় সড়ক ও জনপথের গোল্লাপাড়া বাজার টু কাশিম বাজার প্রায় ২৭০০ মিটার সড়ক সংস্কারে ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয়রা জানান বৃষ্টির মধ্যে ও নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করার কারণে সংস্কার এর দুই মাসের মধ্যেই খানা-খন্দের সৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টির মধ্যেই দায়সারাভাবে সংস্কার কাজ করায় এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
রাজশাহী সড়ক ও জনপথের একশ্রেণীর কর্মকর্তা ও ঠিকাদারগণ মিলেমিশে এই অনিয়ম-দুর্নীতি করেছেন। সরেজমিনে অনুসন্ধান করা হলে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যাবে বলে একাধিক সুত্র নিশ্চিত করেছে। সংশ্লিষ্ট এলাকাবাসি এবিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদুক) দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। স্থানীয়দের দাবি ঠিকাদারকে বিল পরিশোধ করার আগে এসব সড়ক সরেজমিন পরিদর্শন করা হোক। এদিকে সড়কের ভাঙা স্থানে আবারো পাথর দেয়া হচ্ছে, কিন্ত্ত রোলার করা হচ্ছে না, এতে সড়ক পূর্বের অবস্থায় রুপ নিয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কাছে থেকে ১৫ শতাংশ টাকায় তানোর-কাশিমবাজার সড়ক সংস্কার কাজের কার্যাদেশ কিনে কাজটি করেছেন রাজশাহী শহরের রজব আলী। এদিকে সড়ক সংস্কারের পুর্বেই সড়কের যাবতীয় তথ্য সংবলিত সাইনবোর্ড সাঁটানোর বাধ্যবাধকতা থাকলেও কোনো সাইনবোর্ড না সাঁটিয়ে। এলাকার মানুষের কাছে তথ্য গোপণ করে তানোর-কাশিম বাজার সড়ক সংস্কারে নজিরবিহীন অনিয়ম-দুর্নীতি করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী রুবেল ইসলাম, সাদিকুল ইসলাম ও আব্দুর রহমান বলেন, গত ১৫ জুন রোবিবার দিনভর ভারি ও গুড়িগুড়ি বৃষ্টি হয়, কিন্ত্ত বৃষ্টির মধ্যেই তানোর-কাশিম বাজার সড়কের কার্পেটিং কাজ করা হয়েছিল। এসময় সেখানে সড়ক ও জনপথের (সওজ) কোনো কর্মকর্তার দেখা পাওয়া যায়নি।
উপজেলা এলজিইডির নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা জানান, সড়কের বেড ঠিকমতো মেরামত না করে এভাবে কার্পেটিং করার কোনো মানে হয় না। এছাড়াও বৃষ্টির মধ্যে কার্পেটিং করা হয়েছিল, রোলার করার পর পরই সড়কের বিভিন্ন স্থানে ভেঙে গেছে ও কাদাসহ পানি জমেছিল বলে অল্প দিনেই সড়ক আগের অবস্থায় ফিরে গেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ঠিকাদার বলেন, রহনপুরের বাবু, অফিসের মান্নাফ ও এনামুল সাহেব যোগসাজশ করে কার্যাদেশ বেচাকেনা নিয়ন্ত্রণ করেছেন। জনৈক মইনুউদ্দিন নামের এক ঠিকাদার এসব কাজ বিক্রি করেছেন। তিনি বলেন, মান্নাফ সাহেবের নেতৃত্বে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট চক্র গড়ে উঠেছে।
এদিকে নাম প্রকাশ না করার সর্তে (সওজ)’এর এক এসও বলেন, ছিটেফোঁটা বৃষ্টির মধ্যেও কার্পেটিং কাজ করা যাবে না সত্য, তবে কাজ শুরুর পর বৃষ্টি হলে গরম পাথর তো ফেলা দেয়া যায় না, তাই বৃষ্টির মধ্যেই কিছুটা কার্পেটিং কাজ করা হয়েছিল।
এবিষয়ে জানতে চাইলে (সওজ) এর তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী হাফিজুর রহমান বলেন,গত বুধবার কাজ পরিদর্শন করা হয়েছে এবং যেখানে, যেখানে সমস্যা আছে দুই-এক দিনের মধ্যেই তা মেরামত করা হবে।
এবিষয়ে জানতে চাইলে সড়ক ও জনপথের (সওজ) উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী, সড়ক উপ-বিভাগ-১ আব্দুল মান্নাফ আকন্দ কোনো তথ্য দিতে অপারগতা প্রকাশ করে বলেন, সড়ক নস্ট হলে বিল পরিশোধের আগে আবার করে নেয়া হবে। তিনি বলেন, ইতমধ্যে কদিন আগে তানোর-কাশিমবাজর রাস্তা পুণরায় মেরামত করা হয়েছে।
এবিষয়ে জানতে চাইলে ঠিকাদার পরিচয় দিয়ে রজব আলী বলেন, কাজে কোনো অনিয়ম হয়নি,তথ্য অফিসে আছে, তাদের কাছে কোনো তথ্য নাই। তিনি বলেন, কাজ দেখবেন অফিস, সড়ক যদি নস্ট হয় তাহলে তারা আবার করে দিবেন। তিনি বলেন, গত কদিন আগেই রাস্তা ঠিক করা হয়েছে।