বাগমারা প্রতিনিধি
রাজশাহীর বাগমারায় কাঁদতে কাঁদতে পরীক্ষাকেন্দ্র থেকে ফিরে গেল দৃষ্টি প্রতিবন্ধী তাওসিফ রহমান রিহান(১৫)।শ্রুতি লেখক না পাওয়াতে তাকে ফিরে যেতে হয়েছে।পরীক্ষার্থীর মাতা দিলরুবা আফরোজ শিরিন অভিযোগ করেন,শ্রুতি লেখক চেয়ে আবেদন করা হলেও কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণে অনুমতি পাওয়া যায়নি। বৃহস্পতিবার থেকে কারিগরি শিক্ষাবোর্ডের অধীনে শুরু হওয়া মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষা ( ভোক) নবম শ্রেণির পরীক্ষার্থী ছিল তাওসিফ রহমান রিহান।পরীক্ষার্থীর মা বাগমারা পাইলট উচ্চবিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দিলরুবা আফরোজ শিরিন জানান,তাঁর ছেলে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী হওয়া সত্ত্বেও লেখা পড়া চালিয়ে যাচ্ছিল।স্থানীয় বাগমারা টেকনিক্যাল ভোকেশনাল স্কুলে ভর্তি করে দেওয়া হয়। ওই স্কুলে পড়াশোনা করছিল সে। এবার কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে নবম শ্রেণিতে পরীক্ষা দেওয়ার কথা।শিক্ষাবোর্ডের নিয়মানুসারে এবং সুপারিন্টেনডেন্টের ( প্রধান শিক্ষক) পরামর্শে শ্রুতিলেখকের জন্য আবেদন করেন কেন্দ্র সচিবের মাধ্যমে। এজন্য অষ্টম শ্রেণিতে পড়া একজন শ্রুতি লেখক মনোনীত করে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দাখিল করেন।
সে মোতাবেক আজ সকালে শ্রুতিলেখক বাগমারা পাইলট উচ্চবিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র তামিম হোসেনকে সঙ্গে নিয়ে ভবানীগঞ্জ কারিগরি ও ব্যবস্থাপনা কলেজ পরীক্ষাকেন্দ্রে আসে পরীক্ষার্থী তাওসিফ রহমান রিহান(১৫)।শ্রুতি লেখকের সঙ্গে নিয়ে পরীক্ষা প্রবেশের সময় শ্রুতি লেখক তামিম ইসলামকে বাধা দেওয়া হয়।শ্রুতি লেখকের অনুমতি মেলেনি বলে জানানো হয়। পরীক্ষাকেন্দ্র থেকে শ্রুতি লেখকসহ বেরিয়ে আসে পরীক্ষার্থী।বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) ছিল বাংলা বিষয়ের পরীক্ষা।পরীক্ষার্থীর বাবা তৌহিদুর রহমান ও কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান,পরীক্ষার্থী যেভাবে কেঁদে কেন্দ্র থেকে বেরিয়ে এসেছে তা হৃদয়ে নাড়া দিয়েছে।সে মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েছে বলে তাঁরা জানান।বেলা সাড়ে ১১ টায় পরীক্ষার্থীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে সে কান্নাকাটি করে।কোনো কথা বলতে পারেনি।এই বিষয়ে ভবানীগঞ্জ কারিগরি ও ব্যবস্থাপনা কলেজের সচিব অধ্যক্ষ আতাউর রহমান শিবলী বলেন, "শিক্ষাবোর্ড থেকে মূলত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বা পরীক্ষার্থীর শ্রুতি লেখকের অনুমতি নিয়ে আসতে হবে। তাঁরা অনুমতি না আনায় শ্রুতি লেখককে নিয়ে পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়নি।"তবে শিক্ষার্থীর মা অভিযোগ করে বলেন, কেন্দ্র সচিব এ সংক্রান্ত সব দায়িত্ব নিয়েছিলেন।তিন দিন আগেও কথা বলা হয়েছে।সব কাগজ সুপারিন্টেনডেন্টের মাধ্যমে পৌঁছানো হয়েছে।তবে বাগমারা টেকনিক্যাল ভোকেশনাল স্কুলের সুপারিন্টেনডেন্ট এস এম মজিবর রহমানের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি সাড়া না দেওয়াতে কথা বলা যায়নি।