প্রতিবেদক:
মীর শরিফুল ইসলাম চৌধুরী, কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধি
প্রতিবেদন:
কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার চাঁপড়া ইউনিয়নের লাহিনীপাড়া গ্রামের বাসিন্দা সুফিয়া খাতুন, মীর মশাররফ হোসেন স্মৃতি পাঠাগার ও অডিটোরিয়ামে দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে ঝাড়ুদার হিসেবে কর্মরত। অথচ আজও তার মাসিক সম্মানী মাত্র ১,৫০০ টাকা! এই দীর্ঘ সময়ে বেতন বাড়েনি একটুও, যা বর্তমান বাজারে ন্যূনতম জীবিকা নির্বাহের জন্যও যথেষ্ট নয়।
সুফিয়া খাতুন বলেন, “বিগত পনেরো বছরে অনেক আবেদন করেছি বেতন বাড়ানোর জন্য। কেউ শোনেনি। এই সামান্য টাকায় সংসার চালানো তো দূরের কথা, এখন চিকিৎসা ও খাদ্যের ব্যবস্থাও করতে পারছি না।”
তার একমাত্র ছেলে কিডনি রোগে আক্রান্ত। একটি কিডনি নষ্ট হয়ে গেছে, আরেকটিও ঝুঁকির মুখে। ছেলের চিকিৎসার খরচ বহন করতে গিয়ে প্রায় নিঃস্ব সুফিয়া। প্রয়োজন প্রায় ১০ লাখ টাকা, যা সংগ্রহ করা তার পক্ষে অসম্ভব। একমাত্র উপার্জনের আশ্রয় ছিল এই সামান্য বেতনটাই।
স্থানীয়রা জানান, সুফিয়া খাতুন প্রতিদিন যথারীতি পাঠাগার ও অডিটোরিয়ামের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ করেন। বয়স হয়ে গেছে, তবু কাজে কখনো অনিয়ম করেন না।
পাঠাগারের কেয়ারটেকার সৈয়দা আশেকুন নাহার বলেন, “সুফিয়া খাতুন খুবই দায়িত্বশীল কর্মী। এই টাকায় সংসার চালানো অসম্ভব—জেলা পরিষদের উচিত দ্রুত তার বেতন বৃদ্ধি করা।”
কুষ্টিয়া জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মুকুল কুমার মৈত্র বলেন, “বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। আমরা বিষয়টি গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করছি। শিগগিরই তার বেতন বৃদ্ধির প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
এই প্রান্তিক নারী যেন নিঃশব্দে জীবনের ভার বইছেন। তার মতো আরও কত শত সুফিয়া খাতুন হয়তো নিঃশব্দে বঞ্চনার বোঝা বহন করছেন—যাদের দিকে ফিরে তাকানোর এখনই সময়।