কুয়েত, মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম ধনী রাষ্ট্র। তেলের রাজ্যে কর্মসংস্থানের আশায় প্রতিবছর হাজার হাজার বাংলাদেশি পাড়ি জমান এই দেশে। কেউ আসেন ঘাম ঝরানো শ্রমিকের ভুমিকায়, কেউ আসেন পেশাজীবী হয়ে। তবে সবার লক্ষ্য এক—স্বপ্নের একটি ভবিষ্যৎ গড়া, প্রিয়জনের মুখে হাসি ফোটানো।
সাফল্যের গল্প:
অনেক প্রবাসী আজ কুয়েতে নিজেদের কষ্ট আর অধ্যবসায়ে স্থিতি পেয়েছেন। কেউ কেউ দোকান খুলেছেন, কেউ চালাচ্ছেন রেস্টুরেন্ট, আবার কেউ রয়েছেন প্রশাসনিক বা সেবামূলক পেশায়। নিয়মিত রেমিটেন্স পাঠিয়ে দেশে গড়ে তুলেছেন বাড়ি, শিক্ষা ও চিকিৎসার ব্যবস্থা। অনেকে আবার বাংলাদেশ কমিউনিটিতে সামাজিক নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
কষ্টের অধ্যায়:
তবে এই সুখের পেছনে লুকিয়ে আছে সীমাহীন ত্যাগ। দিনরাত খাটুনি, প্রখর গরমে কাজ করা, পরিবার থেকে দূরে থাকা, অনেক সময়ে কাজের অনিশ্চয়তা ও বেতন বৈষম্যের শিকার হওয়া—এসবই কুয়েত প্রবাসীদের নিত্যদিনের বাস্তবতা।
কোনো কোনো শ্রমিক বৈধতার জটিলতায় পড়ে আইনি বিপাকে পড়েছেন। আবার কেউ চিকিৎসা সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন নানাভাবে। কর্মস্থলে দুর্ঘটনায় আহত হওয়া সত্ত্বেও মালিক পক্ষ দায় নিচ্ছে না—এমন ঘটনাও শোনা যায়।
আশা ও প্রত্যাশা:
বাংলাদেশ দূতাবাসের ভূমিকা এই প্রেক্ষাপটে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কুয়েতের আইন ও প্রবাসীদের অধিকার বিষয়ে সঠিক দিকনির্দেশনা এবং আইনি সহায়তা তাদের প্রাপ্য। প্রবাসীরা চান, দূতাবাস আরও সক্রিয় হোক, দূরত্ব ঘোচাতে কমিউনিটি সংলাপ বাড়ুক।
উপসংহার:
কুয়েতে প্রবাসী বাংলাদেশিদের জীবন মানে শুধুই অর্থ উপার্জন নয়; এর মধ্যে লুকিয়ে আছে আশা-নিরাশার এক মিশ্র চিত্র। তারা বিদেশে থেকেও প্রতিনিয়ত দেশের সঙ্গে যুক্ত, দেশের উন্নয়নে অবদান রাখছেন। তাদের সুখে-দুঃখে রাষ্ট্র ও সমাজের পক্ষ থেকে আরও আন্তরিক সহানুভূতি ও সহযোগিতা কাম্য।
সাংবাদিক এইচ এম এরশাদ
শ্রম ও উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক, বাংলাদেশ তৃণমূল সাংবাদিক ফোরাম (বিটিএসএফ)
সেন্ট্রাল মেম্বার, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা