
তারিখ: ০১ নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দ
প্রেরক: আলমগীর নূর, সহ-সভাপতি, হাজারীলেইন ঔষধ ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতি ও প্রোপ্রাইটর, নন্দন ফার্মা।
জনস্বার্থের বিপরীতে ধর্মঘট:
বিসিডিএস-এর অমানবিক সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ, ৩ নভেম্বর দোকান খোলা রাখার ঘোষণা
বাংলাদেশ কেমিস্টস্ এন্ড ড্রাগিস্টস্ সমিতি (বিসিডিএস)-এর কেন্দ্রীয় পরিচালনা পরিষদ কর্তৃক আগামী ০৩-১১-২০২৫ খ্রিষ্টাব্দ, রোজ সোমবার, সারা বাংলাদেশে সকাল-সন্ধ্যা ঔষধের দোকান বন্ধ রাখার যে একতরফা ও অমানবিক কর্মসূচী ঘোষণা করা হয়েছে, তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছে হাজারী লেইন ঔষধ ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতি।
সমিতির সহ-সভাপতি এবং নন্দন ফার্মা-এর প্রোপ্রাইটর আলমগীর নূর আজ (০২ নভেম্বর) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এই অমানবিক সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানান এবং জনগণের সেবার স্বার্থে চট্টগ্রামের সকল ফার্মেসি খোলা রাখার আহ্বান জানান।
বিবৃতিতে আলমগীর নূর যা বলেন:
“ঔষধ ব্যবসা আমাদের জীবিকা হলেও এটি সাধারণ মানুষের জীবনের সাথে সরাসরি জড়িত একটি মৌলিক চাহিদা। আমরা ব্যবসায়ীরা সব সময় ন্যায্য দাবি আদায়ের পক্ষে, কিন্তু সেই দাবি আদায়ের নামে দেশের সাধারণ নাগরিকদের এবং অসুস্থ রোগীদের জিম্মি করে হয়রানি করা এবং একটি ‘নাটক’ মঞ্চস্থ করার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। দাবি আদায়ের সঠিক ও যৌক্তিক পন্থা অবলম্বন না করে, কিছু ফাজিল লোকের ফাইজলামির কারণে বাংলাদেশের সাধারণ জনগণের হয়রানি হতে দেব না আমরা।”
মূল প্রতিবাদ ও অভিযোগসমূহ:
আলোচনার মাধ্যমে সমাধান সম্ভব: আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস, ঔষধ বিক্রয় কমিশন ১২% থেকে ২৫%-এ উন্নীত করার মতো গুরুত্বপূর্ণ দাবি আলোচনার টেবিলে, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও শিল্প সমিতির সাথে বৈঠকের মাধ্যমেই সমাধান করা সম্ভব। চেয়ারে বসে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে যে সমস্যার সমাধান সম্ভব, তা না করে ধর্মঘটের মতো কঠোর সিদ্ধান্ত অযৌক্তিক।
দায়িত্বহীন নেতৃত্ব ও ব্যর্থতা ঢাকার চেষ্টা: ওষুধ শিল্প সমিতি আমাদের ১৯% কমিশন দিতে রাজি হয়েছিল। কিন্তু বর্তমানে কেন্দ্রীয় নেতারা শিল্প সমিতির সাথে আলোচনা করে সেই ১৯% কমিশন বাস্তবায়নে ব্যর্থ হয়েছেন। সামনের নির্বাচনে নিজেদের অবস্থান জানান দিতে এবং নিজেদের অপকর্ম ও ব্যর্থতা ঢাকতেই তারা সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে এই নাটক রচনা করেছেন।
সিদ্ধান্ত গ্রহণে অস্বচ্ছতা: ৪৩ জন পরিচালকের মধ্যে মাত্র ১৩ জনের মতামতের ভিত্তিতে এই ধর্মঘট আহ্বান করা হয়েছে। এই সংগঠনিক দুর্বলতা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের অস্বচ্ছতা প্রমাণ করে যে, এটি রাষ্ট্র ও জনগণের মুখোমুখি বাংলাদেশ কেমিস্টস্ এন্ড ড্রাগিস্টস্ সমিতির সদস্যদের হেয় করার একটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রচেষ্টা।
ফৌজদারি অপরাধের দায়: “যদি এই অমানবিক ধর্মঘটের ফলে বাংলাদেশের কোনো সাধারণ নাগরিক, বিশেষ করে কোনো অসুস্থ রোগী, সময়মতো ঔষধ না পেয়ে মারা যান, তবে তার পূর্ণ দায়ভার মইনুল হক চৌধুরী গং-সহ কেন্দ্রীয় পরিচালনা পরিষদকে নিতে হবে,” জনাব নূর কঠোরভাবে বলেন।
দোকান খোলা রেখে আন্দোলনের আহ্বান: ঔষধ ব্যবসায়ীদের স্বার্থে আমরা সব আন্দোলন করতে প্রস্তুত। কিন্তু সেটা অবশ্যই দোকান খোলা রেখে সাধারণ জনগণকে কষ্ট না দিয়ে। আমরা রাজপথে, নিয়ম তান্ত্রিক ও যুগোপযোগী উপায়ে দুর্বার আন্দোলন করে দাবি আদায় করবো।
আলমগীর নূর-এর চূড়ান্ত আহ্বান:
“আমরা কেন্দ্রীয় পরিচালনা পরিষদের প্রতি অবিলম্বে এই দোকান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের আহ্বান জানাচ্ছি। জনস্বার্থে, হাজারী লেইন ঔষধ ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতি আগামী ০৩-১১-২০২৫ খ্রিষ্টাব্দে চট্টগ্রামের সকল সাধারণ ঔষধ ব্যবসায়ীর প্রতি দোকান খোলা রাখার এবং জীবন রক্ষাকারী ঔষধ সরবরাহ নিশ্চিত করে জনসেবা অব্যাহত রাখার উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছে।”